আমরা শেয়ার বাজারে ট্রেডিং এর কথা শুনে থাকি, ট্রেডিং কে শেয়ার বাজারের সব থেকে বিপদজনক মনে করা হয়। আজকে আমরা জানবো ট্রেডিং কি, কিভাবে ট্রেডিং করা হয় A to Z সম্পূর্ণ তথ্য শেয়ার করব।

ট্রেডিং কি
আমরা বাংলাতে সরল ভাষায় ট্রেডিং হল একপ্রকার বাণিজ্য যেমন কোন বস্তুকে কিনে কম সময়ে মধ্যে সেটিকে কিছু লাভ রেখে বেশি দামে বিক্রি করে তাকে ট্রেডিং বলে এই পদ্ধতির মাধ্যমে শেয়ার বাজারে স্টক এক্সচেঞ্জ ফিউচার ও অপসন ট্রেডিং করা হয়।
অ্যাসেটের ভিত্তেতে ট্রেডিং কত প্রকার
- ইকুইটি ট্রেডিং
- ফিউচার এন্ড অপসন ট্রেডিং
- কমোডিটি ট্রেডিং
- ফরেক্স ট্রেডিং
- ক্রিপ্টো ট্রাডিং
ইকুইটি ট্রেডিং কি
শেয়ার বাজারে স্টক গুলিকে ছোটো ভাবে ইকুইটি বলা হয়। কিছু কিছু শেয়ারে ইন্ট্রাডে চালু থাকে আমরা সেই স্টক গুলিকে কিনে কয়েক ঘন্টার মধ্যে আমরা বিক্রি করে মুনাফা লাভ করতে পারি তাকে ইকুইটি ট্রেডিং বলে ।
ফিউচার ও অপসন ট্রেডিং
শেয়ার বাজারে নিফটি ,সেনসেক্স , স্টক গুলিকে অপসন চেনর মাধ্যমে ট্রেডিং করা হয়।
কমোডিটি ট্রেডিং
কমোডিটি এর অর্থ হচ্ছে যে সব দ্রব গুলিকে আমরা প্রত্যেক দিন ব্যবহার করি , নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু যেমন – চাল, শস্য, তেল, গ্যাস, সোনা, রূপ, ইত্যাদি গুলিতে শেয়ার বাজারের মতো কমোডিটি মার্কেট এ ট্রেডিং করা হয়।
ফরেক্স ট্রেডিং
ফরেক্স মার্কেট – শেয়ার মার্কেট থেকে আলাদা এখানে বিভিন্ন দেশের কারেন্সী বা অর্থে ট্রেডিং করা হয়।
ক্রিপ্টো ট্রেডিং
আমরা ক্রিপ্টো কারেন্সীতে বিনিয়োগ করে কিছু ঘন্টা বা কয়েক দিন পরে ক্রিপ্টো কয়েনটির মূল বৃদ্ধির ফলে আমরা সেটিকে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করি এই লেনদেনের মাধ্যমে ক্রিপ্টো কারেন্সীতে ট্রেডিং করা হয়।
শেয়ার বাজার কিভাবে কাজ করে ? শেয়ার মার্কেট থেকে সহজে টাকা কামানোর উপায়
ট্রেডিং এর সুবিধা অসুবিধা
সুবিধা :- আপনি যদি ট্রেডিং বইগুলি পড়ে ও ভালো ভাবে অন্যালিসিস করে নিয়ম কানুন মেনে ট্রেডিং করে থাকেন তাহলে অল্প পুঁজির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রত্যেকদিন ইনকাম করা সম্ভব।
ট্রেডিং আপনি পেশা হিসাবে বেছেনিতে পারেন। যে কোনো ব্যাক্তি ঘর-বাড়ি, অফিস, দোকান, যে কোনো জায়গা থেকেই ট্রেডিং করতে পারে।
অসুবিধা :- যে ভাবে ট্রেডিং এর মাধ্যমে অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারি তেমনিই কয়েক মিনিটের মধ্যেই বহু অর্থ কে আমরা হারাতে পারি কিছু কিছু ক্ষেত্রে লসের ভাগ অপরিসীম হয়ে থাকে।
এই সব কারণে ট্রেডিং কে অনেক বিপদজনক মনে করা হয়। নুতন ইনভেস্টরদের এর থাকে দূরে থাকতে বলে হয়। ট্রেডিং বিষয়ে ভালো কোনো ব্যাক্তি পরামর্শ ছাড়া ট্রেডিং না করাই ভালো।
কি ভাবে ট্রেডিং করবো
আপনি যে মার্কেটে ট্রেডিং করবেন সেখানে আপনার ডিমান্ট একাউন্ট চালু থাকতে হবে। শেয়ার বাজারে ডিমান্ট একাউন্ট এ ইনভেস্ট করা যায়, ট্রেডিং করার জন্য আলাদা ভাবে একাউন্ট খুলতে হয়।
আপনি অনলাইন ট্রেডিং এপ্লিকেশন, ওয়েবসাইট, এর মাধ্যমে বাড়িতে বসে যে কোনো মার্কেটে ট্রেডিং করতে পারবেন।
ট্রেডিং কাজ করার কৌশলের ভিত্তিতে
Momentum ট্রেডিং
অনেক কম সময়ে ট্রেড প্যাটার্ন এর ভিত্তিতে ট্রেড করা হয়। কোম্পানি গুলির ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করে দেখা হয় না। সঠিক সময় ও প্যাটার্ন কে বেশি গুরত্ব দেওয়া হয়। আপনাকে খুব তাড়াতাড়ি ট্রেড করতে হবে ও সঠিক সময়ের মধ্যে ট্রেড কে বন্ধ করে দিতে হবে।
টাইম এর উপর কাজ করার ভিত্তিতে ট্রেডিং কত প্রকার
Position ট্রেড
কোনো স্টক কে ১ বছর বা আরো অনেক দীর্ঘ সময়ের জন্য হোল্ড করে রাখলে তাকে পসিশন ট্রেডিং অথবা, ইনভেস্টমেন্ট বলা হয়ে থাকে।
Swing ট্রেডিং
ট্রেডিং ১ – ২ সপ্তাহের হয়ে থাকে, বড়ো বড়ো ইনভেস্টর খবরা খবরে স্টকটির volume ভিত্তিতে এমন কোনো খবর যার কারনে শেয়ারে কোনো প্রকার গতিবিধি দেখা দিতে পারে। এই সময়ে সুইং ট্রেডিং করা হয়।
Intraday ট্রেডিং :-
একদিনের মধ্যে কোনো শেয়ার কে কিনে সেই দিনে বিক্রি করলে তাকে ইন্ট্রাডে বলা হয়। ৯:১৫ AM থেকে ৩:৩০ PM সময়ের মধ্যে আপনার লাভ , লস যায় হোক ট্রেডটি বন্ধ হয়ে যাবে।
Scalping ট্রেডিং :-
ইনডিকেটর শিকন্যালকে ব্যাবহার করে। ইন্ট্রাডের মতো পুরো দিন ট্রেড না করে কিছু সেকেন্ড বা মিনিট এর মধ্যে শেয়ারটিকে কিনে বিক্রি করে হয়। বড়ো ইনভেস্টরা হাই মার্জিনে ট্রেড করে থাকে। এর ফলে কিছু পয়েন্ট মুভমেন্টই ইনভেস্টর লাভ করে থাকে।
কোন ক্রিপ্টো-কারেন্সী গুলিতে ইনভেস্ট করা দরকার। লক্ষ লক্ষ টাকা কামানোর গোপন টিপস
অনলাইন ট্রেডিং কি ?
ঐতিহাসিক যুগে কাগজ কলম এর মাধ্যমে অফলাইনে ট্রেডিং করা হতো বর্তমানে ইন্টারনেটের সাহায্যে মোবাইলে অনলাইন এপ্লিকেশন এর মাধ্যমে আপনি অনলাইন ট্রেডিং করে, ক্রয় এবং বিক্রয় অনেক সহজে করতে পারেন।
ট্রেডিং কোম্পানি কী ?
বর্তমানে সব মার্কেট গুলির অসংখ্য অনলাইন ব্রোকার অথবা, ট্রেডিং কোম্পানি আছে যার, অনেক কম টাকায় ট্রেডিং করতেদেয়। কিছু কিছু এপ্লিকেশনে ১৮ বছরের নিচের বয়সের ছেলে – মেয়েদের কেও ট্রেডিং করতে দেয় ।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশ
সাল ১৯৭১ বাংলাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর খাদ্য সংকটে পরে যায় এর থেকে মুক্তি পেতে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের ঢাকাতে ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশ ( টি সি বি ) প্রতিষ্টা করা হয়। আপাতকালে বাংলাদেশ আমদানি ও প্রয়োজনে কিছু জিনিসকে রপ্তানি করে ।
আজকের ট্রাডিং বিষয়ে শেষ কথা
আমরা জানলাম ট্রেডিং কি , ট্রেডিং কত প্রকার ও কি কি এবং কি ভাবে ট্রেডিং করবেন – বেশির ভাগ তথ্যই আলোচনা করেছি
ট্রেডিং অনেক কঠিন ও বিভিন্ন প্রকারে কাজ করে, হয়তো কিছু কিছু তথ্যকে আমরা মিস্ করতে পারি তোমরা কমেন্ট করে জানাতে পারো। ~ ধন্যবাদ